ইমপিচমেন্ট এর মুখোমুখি
আমেরিকার চার প্রেসিডেন্টFour US presidents face impeachment
১। প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু
জনসন
![]() |
প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন |
সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু
জনসন আজ থেকে প্রায় দেড়শত বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম বার
অভিসংশিত হয়েছিলেন । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট নেতা এবং প্রেসিডেন্ট
অ্যান্ড্রু জনসন ১৮৬৮ সালে মার্কিন কংগ্রেসের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে সেক্রেটারি অফ
ওয়ার বা যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এডউইন স্ট্যানটনকে বরখাস্ত করেছিলেন । তার বিরুদ্ধে
আরো অভিযোগ ছিল যে, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং বিচারে বাধা দেওয়ার । সেসব কারণে সেবার
তাকে ক্ষমতা হারাতে হয়নি । সামান্যর জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি । একটিমাত্র ভোট
এর অভাবে তার অভিশংসন এর জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন পাওয়া যায়নি ।
অনেকে বলে থাকেন, অভিযোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন কেঁদে ছিলেন । প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন
বলেছিলেন, নিজের মর্যাদা উদ্ধার করার লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাবেন । এরপরে যতটুকু
সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ছিলেন তার পক্ষে দেশ চালানো খুব একটা
সহজ ছিল না । ১৮৫৯ সালে ডেমোক্রেটরা পরাজিত হলে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বিদায়
নেন ।
২। প্রেসিডেন্ট রিচার্ড
নিক্সন
![]() |
প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন |
সাবেক প্রেসিডেন্ট
রিচার্ড নিক্সন আরো একজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যার বিরুদ্ধে অভিশংসন
এর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কঠোরভাবে । যদিও অভিশংসন এর উদ্যোগ নেওয়ার আগেই ক্ষমতা
ছেড়ে দিয়েছিলেন রিচার্ড নিক্সন । ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিশংসন এর
উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ১৯৭৪ সালে । তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, ১৯৭২ সালে
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ওয়াশিংটন ডিসিতে ডেমোক্রেট পার্টির অফিসে তার দল আঁড়ি
পেতেছিল । তদন্তে প্রমাণ হয় যে, দুই ব্যক্তি অফিসের মধ্যে গোপনে যন্ত্র বসিয়েছিলেন
। নিক্সন এর প্রচারণার তহবিল থেকে অর্থ দেওয়া হয়েছিল তাদের । এতে ব্যাপক
সমালোচনার মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন । এর পরের দুই বছর তিনি এই
কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেওয়ার শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন । তাকে অভিশংসন এর জন্য ভোটের
ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় । কিন্তু সেই ভোট আর হয়নি । কারণ
অভিশংসন ভোট গ্রহণের আগেই তিনি পদত্যাগ করেন । প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের
অভিসংশিত হওয়া মোটামুটি নিশ্চিত ছিল ।
৩। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন
![]() |
প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন |
সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল
ক্লিনটন প্রায় বিশ বছর আগে অভিসংশিত হয়েছিলেন । ডেমোক্রেট পার্টির নির্বাচিত
সাবেক প্রেসিডেন্ট মিথ্যা কথা বলে শপথ গ্রহণ করা এবং বিচারে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন
বলে অভিযোগ উঠেছিল । এই অভিযোগে তাকে অভিসংশিত করা হয়েছিল । এছাড়াও হোয়াইট
হাউজের একজন ইন্টার্ন মনিকা লিউনস্কির সাথে যৌন সম্পর্কের ব্যাপারে মিথ্যা
বলেছিলেন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন । শুধু তাই নয়, এই বিষয়ে বিল ক্লিনটন ইন্টার্ন
লিউনস্কিকেও মিথ্যা বলতে বলেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল । কিন্তু পরে ১৯৯৯ সালে যখন
সব অভিযোগ মার্কিন উচ্চকক্ষ সিনেটে বিল ক্লিনটনের বিচার হয়, তখন তাকে দোষী
সাব্যস্ত করা যায়নি । কারণ এসব অভিযোগের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সিনেটরের সমর্থন
পাওয়া যায়নি । এর ফলে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে ক্ষমতা ত্যাগ করতে হয়নি ।
৪। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড
ট্রাম্প
![]() |
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে
হয়তোবা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পে এর নাম
ঘৃনাভরে সেখানকার মানুষ স্বরণ করবে । মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত কংগ্রেস ভবনের লজ্জাজনক হামলার
পর প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অসম্মানজনক ভাবে বিদায় করতে আর এক ধাপ
এগিয়ে গেলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা । ১৪ জানুয়ারি ২০২০ বুধবার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে
অভিশংসনের বিল পাশ হয় । বার্তাসংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, ডেমোক্রেটিক পার্টির আনা
এ প্রস্তাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টিরও সমর্থন মেলে । সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট
ডিক চেনির মেয়ে লিজ চেনিসহ ১০ রিপাবলিকান নেতা ডেমোক্রেটদের এই প্রস্তাবে ভোট দেন
। ৪৩৫ সদস্যের প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি ২৩২ - ১৯৭ ভোটে পাস হয় বলে বার্তাসংস্থা
সিএনএন জানিয়েছে । সহিংস বিদ্রোহে উস্কানি দেওয়ার জন্য দায়ী করে ডোনাল্ড
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিলটি পাশ হয় । ৩ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে
যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প আর মাত্র কয়েকদিন হোয়াইট হাউসে থাকবেন ।।
Post a Comment
Please do not enter any spam link in the comment box.